ঈদে টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের শঙ্কা
যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ, সড়কের বেহাল দশা আর নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা আর উৎকণ্ঠা পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। আসন্ন ঈদুল ফিতরে ভোগান্তিমুক্ত ঘরে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এ মহাসড়কে চলাচলরত উত্তরবঙ্গসহ ২১ জেলার যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
চারলেন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না হওয়াসহ বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টি এ আতঙ্কের মূল কারণ বলেও মনে করছেন তারা। এ স্বত্ত্বেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা ও মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা।
গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা সড়কের চারলেনে উন্নীত করার কাজে আব্দুল মোনেম লি. মীর আক্তার হোসেন লি. ও ডিএনকোসহ ৩টি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি দ্রুতগতিতে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করলেও ঈদের আগে পুরোপুরি যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টির কারণে এ মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ অনেকটা ব্যাহত হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের কদিমধল্যা, পাকুল্যা, নাটিয়াপাড়া, টাঙ্গাইল রাবনা বাইপাস, ধেরুয়া, ঘারিন্দা বাইপাস, রসুলপুর, জালদহ ব্রিজ ও এলেঙ্গাসহ বিভিন্নস্থানে নতুন করে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট গর্ত বন্ধ করাসহ একই সঙ্গে চলছে মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ। আর এসব কারণে স্বাভাবিক দিনে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ, সড়কের বেহাল দশা আর নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে এবার ঈদে এ যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে শঙ্কা করছেন উত্তরবঙ্গ ও অন্যান্য রুটের দূর-পাল্লার যাত্রী ও চালকরা।
এ নিয়ে উত্তরবঙ্গগামী হানিফ পরিবহনের চালক হুমায়ুন জাগো নিউজকে জানান, সড়কের বেহাল দশা আর নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে দিনেই যে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তাহলে ঈদের ছুটিতে কি হবে? তবে যানজট নিরসনে যদি জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ তৎপর এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন তাহলে মহাসড়কে চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
সিরাজগঞ্জগামী অভি পরিবহনের কর্মকর্তা মনির মিয়া জানান, ঈদের ছুটি চলাকালে মহাসড়কের চলমান কাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি দুর্ঘটনা কবলিত ও বিকল হওয়া গাড়ি দ্রুত অপসারণ করাসহ মহাসড়কের যানজট সৃষ্টি হওয়া অংশে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনে তৎপর থাকেন তাহলে এ ভোগান্তির শঙ্কা আর উৎকণ্ঠা অনেকাংশেই দূর হবে বলেও মত প্রকাশ করেছেন তিনি।
এ নিয়ে চারলেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জিকরুল হাসান জানান, চারলেন প্রকল্পের প্রায় ৬৫ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে মোট ২৮টি সেতু প্রায় যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারেন সেই লক্ষে আমরা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় জানান, আসন্ন ঈদে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে এবং ঘরমুখো মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন টাঙ্গাইল পুলিশ প্রশাসন এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করবে। এ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সিদ্ধান্ত নেয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।