চিন্ময়ের স্বচ্ছ বিচার চাইছে ভারত, সোমবার আসছে পররাষ্ট্রসচিব

Voice of Dhaka
আপডেটঃ ডিসেম্বর ৭, ২০২৪ | ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ                             ই-প্রিন্ট ই-প্রিন্ট
Voice of Dhaka
আপডেটঃ ডিসেম্বর ৭, ২০২৪ | ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ                             ই-প্রিন্ট ই-প্রিন্ট
Link Copied!

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর আইনি অধিকার এবং স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দেখতে চায় ভারত। আগামী সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফরকালে তার সরকারের ওই অবস্থান তুলে ধরবেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল গতকাল শুক্রবার নয়াদিল্লিতে মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনায় অংশ নিতে আগামী সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন।এ ছাড়া আরো কয়েকটি বৈঠক করার কথা রয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের।
ইসকন ও চিন্ময় দাস প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে আগেও বলেছি। বাংলাদেশে এ বিষয়ে যে আইনি প্রক্রিয়া চলছে সেটি যাতে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও যথার্থ হয় এবং সংশ্লিষ্ট সবার আইনি অধিকারকে সম্মান জানানো যেন নিশ্চিত করা হয়, সে বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করব।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশে চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। এ নিয়ে দুই দেশেই প্রতিক্রিয়া-পাল্টাপ্রতিক্রিয়া দেখানো হচ্ছে। এরই মধ্যে কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভ এবং আগরতলায় সহিংস বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার পর টানাপড়েন নতুন মাত্রা পায়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাত্ক্ষণিকভাবে এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। তবে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশের মিশনপ্রধানদের ঢাকায় ডেকে পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তাদের কাছ থেকে নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি জানবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভারতের মাটিতে তার মিশনগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরবে।
এদিকে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার পরপরই ওই মিশনে সব ধরনের ভিসা সেবাসহ কনসুলার সেবা বন্ধ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কলকাতায় বাংলাদেশের ভিসাসেবা সীমিত করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারতও কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে ভিসা কার্যক্রম সীমিত পরিসরে পরিচালনা করছে। দুই দেশের টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরের কথা জানানো হয়। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রও পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরের পরিকল্পনার কথা জানান।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবরা নেতৃত্ব দেন। ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে পালাক্রমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগের বৈঠকটি নয়াদিল্লিতে হওয়ায় এবারের বৈঠকটি ঢাকায় হওয়ার কথা।
এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের আসন্ন সফরের সময় আলোচনা হবে কি না তা-ও এখনো ঠিক হয়নি বলে জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার প্রসঙ্গ আসবে কি না তা এখনো নির্ধারিত নয়। কারণ সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে এখনো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কিছু বলেনি।’
রফিকুল আলম বলেন, ‘দিল্লিতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা যেন উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, ভারতকে এ বিষয়টি নিশ্চিতে আহ্বান জানালেও কোনো উত্তর দেয়নি দেশটি।’ মুখপাত্র জানান, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য, পানিবণ্টন, সীমান্তসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে আলোচনা করা হবে।

ট্যাগ: