পটুয়াখালীতে জিপি-পিপি নিয়োগ নিয়ে উত্তেজনা

Voice of Dhaka
আপডেটঃ ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ | ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ                             ই-প্রিন্ট ই-প্রিন্ট
Voice of Dhaka
আপডেটঃ ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ | ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ                             ই-প্রিন্ট ই-প্রিন্ট
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার পটুয়াখালী : পটুয়াখালীতে সরকারি কৌঁসুলি (জিপি),পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)সহ কয়েকটি পদে আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে চরম উত্তেজনা ও দ্বন্দ্ব চলছে আদালত প্রাঙ্গণে। বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের বিক্ষোভ ও প্রতিরোধের মুখে আদালতে যেতে পারছে না নবনিযুক্ত বেশ কয়েকজন আইনজীবী। সহিংস ঘটনার প্রতিকার ও নিরাপত্তা চেয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নবনিযুক্ত জিপি মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ ওরফে পাশা।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, জিপির সরকারি ও ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সহিংসতার শিকার হন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতের নবনিযুক্ত পিপি জামায়াত নেতা রুহুল আমিন।
এদিকে, জিপি পদে জ্যেষ্ঠ সিভিল প্রাক্টিশনার আইনজীবী নিয়োগ চেয়ে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠান জেলা আইনজীবী সমিতি। ১৮ নভেম্বর আইনজীবীদের ডাকা তলবি সভার এক সিদ্ধান্তে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এটিএম মোজাম্মেল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান খোকন এ সুপারিশ পাঠান। জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ও জিপিসহ ৭৮টি পদে নিয়োগ দেয় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সলিসিটর সানা মো. মারুফ হোসাইন।
এ নিয়োগে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি পদে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান টোটন এবং বিশেষ জজ আদালতের পিপি পদে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো. রুহুল আমীন রেজা নিয়োগ পান। এ ছাড়া পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এটিএম মোজাম্মেল হোসেন (তপন) অতিরিক্ত পিপি হিসাবে নিয়োগ পান। ৭৮টি পদের মধ্য জামায়াতের ৫ জন আইনজীবী অন্তর্ভুক্ত হন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি পদে নিয়োগ পান পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মাকসুদুল হক। বাকি পদগুলোতে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা নিয়োগ পান।
এদিকে, গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর ২৮ আগস্ট পিপি-জিপি নিয়োগ চেয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ সুপারিশ পাঠান। ভিপি নুরের সুপারিশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মাকসুদুল হক, স্পেশাল পিপি ফরিদ হোসেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. রুহুল আমিন রেজা, এপিপি মো. মামুন খান ও মনির হোসেন এবং জিপি পদে নিয়োগ পান আব্দুল্লাহ ইউসুফ ওরফে পাশা। যা নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় পটুয়াখালী জেলা বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী মহলে। জেলা বিএনপির বিবদমান দুটি গ্রুপ প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সক্রিয় থাকায় আদালত প্রাঙ্গণ ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা দেখা দেয়।
১৩ নভেম্বর আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় উল্লিখিত পদে নিয়োগ দেওয়ার পর বঞ্চিত একটি মহল কয়েক দফা আন্দোলন গড়ে তোলে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের একটি অংশ।
নবনিযুক্ত জিপি আব্দুল্লাহ ইউসুফকে ২৪ ও ২৫ নভেম্বর আদালতে গেলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসন-পুলিশের হস্তক্ষেপে উদ্ধার হন তিনি।
জামায়াতের পটুয়াখালী আইনজীবী ইউনিটের সভাপতি জেলা আইনজীবী সমিতি পাঠাগার সম্পাদক নবনিযুক্ত পিপি রুহুল আমিন বলেন, প্রজ্ঞাপন জারির পর বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা তার ব্যক্তিগত চেম্বার ভাঙচুর করেন। যে কারণে তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি নবনিযুক্ত এপিপি মো. মাসুদ হোসেন জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফেরামের প্রচার সম্পাদক নবনিযুক্ত সহকারী পিপি এসএম তৌফিক হোসেন মুন্না বলেন, ভিপি নুরের সুপারিশে জেলা জজ আদালতের পিপি নিয়োগ পান পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মাকসুদুল হক ও বিশেষ জজ আদালতের পিপি মো. রুহুল আমিন রেজা। জিপি আব্দুল্লাহ ইউসুফ আওয়ামী লীগের দোসর। হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

ট্যাগ: