আগরতলা মিশনে হামলা, পতাকায় আগুন
নিউজ ডেস্ক : ভারতের আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্তরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। গতকাল সোমবারের এই হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস পৃথক এক বিবৃতিতে বলেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতিতে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাটি বেশ দুঃখজনক।
এটি ভিয়েনা কনভেনশনবিরোধী তৎপরতা। এতে বলা হয়, কোনো দেশের দূতাবাস বা হাইকমিশনের নিরাপত্তাবিধান স্বাগতিক দেশের দায়িত্ব। বিবৃতিতে আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। কলকাতার একটি অনলাইনের খবরে বলা হয়, বিজেপিশাসিত রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা খুলে নিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যায়। পশ্চিম ত্রিপুরার এসপি ড. কিরান কুমার এবং ডিজিপি অনুরাগ ধানকার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।এমন অবস্থায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে নিরাপত্তা জোরদার : একটি সূত্র জানান, আগরতলায় ওই হামলার ঘটনার পর ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল রাতে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এসব বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে বক্তারা বলেন, একটি সভ্য দেশ কখনো অন্য দেশের দূতাবাসে হামলা করতে পারে না। ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তারা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না।
জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী জয় পাল বলেন, ‘ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে আমাদের পরিচয়—আমরা বাংলাদেশি। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা সারা বাংলাদেশের মানুষকেই জানাতে হবে। ভারত ইস্যুতে জগন্নাথ হলকে নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন কথা বলা হয়। কিন্তু এই মিছিলে আজ জগন্নাথ হল থেকে সবচেয়ে বেশি লোক এসেছে।’
চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল : গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর স্টেশনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে সমাবেশে বক্তারা ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ তোলেন।
সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘ভারত বিভিন্নভাবে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।’