নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত পিরোজপুর-১ আসনের প্রার্থী আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শেখ মুজিবকে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসানো হবে এমন উদ্দেশ্য ছিল না। বরং বাংলার মানুষের উদ্দেশ্য ছিল শোষণ ও নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি। তারা ভেবে ছিল একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পাবে। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর দেখা গেল বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষে ভাসছে এবং বাংলার মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে আর শেখ সাহেবের সন্তানরা সোনার মুকুট পরে বিয়ে করছেন।
গতকাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ২ নম্বর মালিখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মিসভা উপলক্ষে স্থানীয় ঝনঝনিয়া মিঠারকুল মাদরাসা মাঠে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মাওলানা আব্দুল আলী নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা মীম ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
মাসুদ সাঈদী বলেন, বাংলার মানুষ দেখেছে, কিভাবে শেখ সাহেবের সন্তানরা ব্যাংকগুলো লুট করেছেন। বিরোধী মতের প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মীকে তৎকালীন সরকার হত্যা করেছে। বাকস্বাধীনতাকে রুদ্ধ করেছে তারা।মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব বন্ধ করে দিয়েছিল তারা। তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনগ্রামের ভেতরে একটি কোরআনের আয়াত ছিল সেই আয়াতটুকু তারা সহ্য করতে পারে নাই। তারা সেটা মুছে দিয়েছে। কবি নজরুল কলেজের নাম ছিল নজরুল ইসলাম সেই ইসলামটুকুও তারা মুছে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা জানতে পারলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় শেখ মুজিব মুসলিম শব্দটুকু সহ্য করতে পারেননি। তারা মুসলিম শব্দটুকু মুছে দিয়েছে। তাহলে কি ৭১ সালে বাংলার মানুষ যুদ্ধ করেছিল ইসলাম মুছে ফেলার জন্য। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ থেকে ইসলাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করে ছিল তারা।’
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লি থেকে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু বাংলার মানুষ তখন বুঝতে পারেনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরে প্রমাণ হয়েছে, বাংলার মানুষ বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লি থেকে ৮১ সালে বাংলাদেশ এসেছিলেন দেশকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা নিয়ে। বাংলাদেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, বাকস্বাধীনতা, ভোটের অধিকার, মানুষের মৌলিক অধিকার সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে শেখ হাসিনা ২৪ সালে আবার ভারতের দিল্লিতে ফিরে গেছে।
মাসুদ সাঈদী বলেন, বাস্তবিক অর্থে বাংলাদেশ এমন কোনো আয়নাঘর ও জাহান্নাম নাই যে শেখ হাসিনার মতো পাপিষ্ঠকে রাখা যায়। শেখ হাসিনা হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছেন, কষ্ট দিয়েছেন, বিনা অপরাধে লাখো মানুষকে জেলে ঢুকিয়েছে তিনি।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রাজ্জাক, নাজিরপুর ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মোল্লা, উপজেলা জামায়েতের বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা আবু দাউদ প্রমুখ।