পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, মামলার প্রস্তুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ৫ আগস্টের পর কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকা ১৮৭ জন পুলিশ সদস্যের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। পলাতক থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা নিতে থানায় মামলা করা হচ্ছে। এমনকি তাদের গ্রেপ্তারে আলাদা টিমও গঠন করেছে পুলিশ। তারা যেন বিদেশে পালাতে না পারেন, সে জন্য বাতিল হচ্ছে তাদের অফিশিয়াল পাসপোর্ট। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর অনেক পুলিশ সদস্যই কাজে যোগ দেননি। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তাদের কাজে যোগদানের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হলেও ১৮৭ জন পুলিশ সদস্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দেননি।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র বলছে, কাজে যোগ না দিয়ে পলাতক থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেনেএকজন ডিআইজি, সাতজন অতিরিক্ত ডিআইজি, দুইজন পুলিশ সুপার, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পাঁচজন সহকারী পুলিশ সুপার, পাঁচজন পুলিশ পরিদর্শক, ১৪ জন এসআই ও সার্জেন্ট, ৯ জন এএসআই, সাতজন নায়েক এবং ১৩৬ জন কনস্টেবল। পলাতক কনস্টেবলদের মধ্যে দুজন নারী সদস্য রয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের বেশির ভাগই দেশের বাইরে চলে গেছেন এবং তাদের বড় অংশই ভারতে অবস্থান করছেন। সূত্র বলছে, পলাতক পুলিশ সদস্যদের তালিকায় শীর্ষে আছেন ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর-রশীদ, যার নামে ৩৮টি মামলা রয়েছে। আরো রয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, খন্দকার নুরুন্নবী, এস এম মেহেদী হাসান, সঞ্জিত কুমার রায় ও সুদীপ কুমার চক্রবর্তী; যাদের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের পর একাধিক মামলা করা হয় পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব পলাতক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের নামে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যারা এখন আর পুলিশ বাহিনীতে নেই, তারা এখন সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, পলাতক ও চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের অফিশিয়াল পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে; যাতে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন। পাসপোর্ট অধিদপ্তর ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর জানান, পলাতক পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অংশ হিসেবেই প্রথমে বেতন-ভাতা বন্ধ এবং পরে মামলা করা হচ্ছে।